ATN
শিরোনাম
  •  

কেরানীগঞ্জে গৃহবধূর আত্মহত্যা: ন্যায়বিচার চেয়ে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

         
কেরানীগঞ্জে গৃহবধূর আত্মহত্যা: ন্যায়বিচার চেয়ে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কেরানীগঞ্জে গৃহবধূর আত্মহত্যা: ন্যায়বিচার চেয়ে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকার কেরানীগঞ্জের পুরাতন সোনাকান্দা এলাকায় যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে শাদিয়া ইসলাম শিফা (২২) নামের এক গৃহবধূর করুণ মৃত্যু ঘটনা স্থানীয়ভাবে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত অক্টোবর মাসে আত্মহত্যা করেন তিনি। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শিফার ওপর শুরু হয় চাপ ও অমানবিক আচরণ। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিয়মিতভাবে যৌতুকের জন্য বিভিন্নভাবে তাকে মারধর করত। শিফা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একসময় বাবার বাড়িতে চলে আসতে বাধ্য হন।

কিন্তু সেখানেও থেমে থাকেনি অত্যাচার। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোবাইলে নানাভাবে হুমকি-হয়রানি করতে থাকে। এই অসম্মান, চাপ ও নির্যাতনের ভয়াবহ পরিবেশে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

শোকাহত পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, মৃত্যুর দিন শিফা গলায় ফাঁস দেওয়ার আগে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। সেই চিরকুটে তিনি বিস্তারিত লিখে গেছেন-কীভাবে নিয়মিতভাবে তাকে নির্যাতন করা হতো, কীভাবে তাকে হয়রানি করা হয়েছে, এবং কী ভয়ংকর মানসিক অবস্থায় তিনি দিন কাটাতেন।

তার দুই বছরের শিশুটিকে রেখে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না-এমন বাস্তবতা ফুটে ওঠে সেই লেখনীতে।

সোমবার বিকেলে কেরানীগঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে নিহত শিফার মা আছিয়া আক্তার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন- “আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনটাই দিয়ে দিলো। দুই বছরের সন্তানকে রেখে সে চলে গেলো! চিরকুটে সে স্পষ্ট লিখে গেছে, তার মৃত্যুর জন্য দায়ী তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমি আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শিফার মতো অসংখ্য নারী এখনো যৌতুকের নামে নির্যাতনের শিকার হন, অনেকেই মুখ খুলতে পারেন না। তারা আশা করছেন, শিফার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হলে ভবিষ্যতে এমন অপরাধ কমে আসবে।

শিফার মা বলেন, “আমার মেয়ের মৃত্যু যেন শুধু আরেকটি পরিসংখ্যান না হয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই, দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।"

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের এমন ঘটনার যদি সঠিকভাবে বিচার না হয়, তাহলে এমন ঘটনা আরও বাড়বে। সে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।

রিপোর্ট: এটিএন নিউজ / জেড.এস
পাঠকের মন্তব্য

সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ সংবাদ


অন্যান্য সংবাদ