যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর পুলিশে সোপর্দ
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় এক তরুণীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক মুক্তিযোদ্ধাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতনের পর পুলিশে দেওয়া হয়েছে। পরে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম মো. আবদুল করিম (৭৬)। তিনি উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখী গ্রামের বাসিন্দা।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ঐ ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা বৃদ্ধের দুইহাত পেছন দিকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বাধা। কয়েকজন ব্যক্তি বৃদ্ধকে ঘিরে আছে। একজন একটি জুতার মালা পড়িয়ে দেয় বৃদ্ধের গলায়। এ সময় বৃদ্ধ আবদুল করিমকে নিশ্চুপ দেখা যায়।
পুলিশ ও থানায় হওয়া মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম প্রতিবেশী এক তরুণী (১৬) কে বাড়িতে একা পেয়ে যৌন নিপীড়ন করে। মেয়েটি এবার স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। কিশোরী মেয়েটিকে ঘরে একা পেয়ে যৌন নিপীড়ন চালায়। এ সময় মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে এবং বাড়িতে এক ভিক্ষুক নারী আসলে ঘটনা দেখে চিৎকার শুরু করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে আবদুল করিমকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। তরুণীকে আগেও হাসি-তামাশার অযুহাতে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতো বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পার্শ্ববর্তী ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া বাজার থেকে বাড়ি আসছিলেন তিনি। ফেরার পথে মিথ্যা অভিযোগে শাহিন তাকে আটক করে। পরে শাহিন এবং তার ছেলে হাবিবুল্লাহ বাড়ির পাশে একটি গাছে প্রায় তিন ঘণ্টা বেঁধে রেখে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারপিট করে। পূর্ব বিরোধের জেরে শাহিন তাকে এ ধরনের নির্যাতন করেছে বলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম জানিয়েছেন।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের মামলায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জুতার মালা পরানোর বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ময়মনসিংহের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক বিমল পাল বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে অপমান করার ঘটনা সারা দেশেই ঘটছে। মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতনের পর গাছে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরানো বর্বরোচিত ঘটনা। একজন মুক্তিযোদ্ধা অন্যায় করলে দেশে আইন আছে, বিচার ব্যবস্থা আছে। আইন তার বিচার করবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা করিম মিলিটারিকে একজন বিএনপি কর্মী যেভাবে অপমান অপদস্থ করেছেন, তা কোনোভাবেই মানা যায় না। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো ঘটনা সম্পূর্ণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। কেউ যদি অপরাধ করে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সেজন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করছি। না হয় বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে।
রিপোর্ট : এটিএন নিউজ/মা.ই.স
অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম মো. আবদুল করিম (৭৬)। তিনি উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখী গ্রামের বাসিন্দা।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ঐ ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা বৃদ্ধের দুইহাত পেছন দিকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বাধা। কয়েকজন ব্যক্তি বৃদ্ধকে ঘিরে আছে। একজন একটি জুতার মালা পড়িয়ে দেয় বৃদ্ধের গলায়। এ সময় বৃদ্ধ আবদুল করিমকে নিশ্চুপ দেখা যায়।
পুলিশ ও থানায় হওয়া মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম প্রতিবেশী এক তরুণী (১৬) কে বাড়িতে একা পেয়ে যৌন নিপীড়ন করে। মেয়েটি এবার স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। কিশোরী মেয়েটিকে ঘরে একা পেয়ে যৌন নিপীড়ন চালায়। এ সময় মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে এবং বাড়িতে এক ভিক্ষুক নারী আসলে ঘটনা দেখে চিৎকার শুরু করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে আবদুল করিমকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। তরুণীকে আগেও হাসি-তামাশার অযুহাতে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতো বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পার্শ্ববর্তী ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া বাজার থেকে বাড়ি আসছিলেন তিনি। ফেরার পথে মিথ্যা অভিযোগে শাহিন তাকে আটক করে। পরে শাহিন এবং তার ছেলে হাবিবুল্লাহ বাড়ির পাশে একটি গাছে প্রায় তিন ঘণ্টা বেঁধে রেখে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারপিট করে। পূর্ব বিরোধের জেরে শাহিন তাকে এ ধরনের নির্যাতন করেছে বলে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম জানিয়েছেন।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের মামলায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জুতার মালা পরানোর বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ময়মনসিংহের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক বিমল পাল বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে অপমান করার ঘটনা সারা দেশেই ঘটছে। মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতনের পর গাছে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরানো বর্বরোচিত ঘটনা। একজন মুক্তিযোদ্ধা অন্যায় করলে দেশে আইন আছে, বিচার ব্যবস্থা আছে। আইন তার বিচার করবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা করিম মিলিটারিকে একজন বিএনপি কর্মী যেভাবে অপমান অপদস্থ করেছেন, তা কোনোভাবেই মানা যায় না। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো ঘটনা সম্পূর্ণভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। কেউ যদি অপরাধ করে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সেজন্য পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করছি। না হয় বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে।
রিপোর্ট : এটিএন নিউজ/মা.ই.স
